ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বেশির ভাগ ছাত্রের মতো আমারও প্রথম পছন্দ ছিল সরকারি চাকরি। তাই প্রস্তুতি নেওয়ার শুরু অনার্স পরীক্ষা দেওয়ার পর থেকেই। রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের ছাত্র ছিলাম। আমরা কয়জন ক্লাসমেট মিলে গ্রুপ করে পড়াশোনা করেছি বিসিএসের জন্য। অনেক পরিশ্রম সত্ত্বেও ২৯তম বিসিএসে ভাইবা বোর্ড পর্যন্ত গিয়ে ফিরে আসি। কিছুদিন সিনিয়র অফিসার পদে কাজ করি সোনালী ব্যাংকে। মাস্টার্স ফাইনাল দেওয়ার পর পরই সোনালী ব্যাংকের সার্কুলার দেওয়া হয়। ব্যাংক নিয়োগ পরীক্ষার জন্য বাড়তি কোনো প্রস্তুতি ছিল না। বিসিএসের প্রস্তুতির ওপর ভরসা রেখেই আবেদন করি এবং চাকরিটি পেয়ে যাই। সোনালী ব্যাংকের চাকরিটির জন্য লিখিত ও ভাইবা দুটি পরীক্ষার মুখোমুখি হতে হয়েছিল। লিখিত পরীক্ষার ব্যাপারে আমি যতটা আশাবাদী ছিলাম, ভাইবার ব্যাপারে ততটা ছিলাম না। নার্ভাসনেস কাজ করেছে। চাকরি হওয়ার পরও আমি পরবর্তী বিসিএস নিয়েই বেশি চিন্তিত ছিলাম। একদিকে চাকরি, অন্যদিকে বিসিএসের প্রস্তুতি।
এ সময়ে আমার বিসিএস প্রস্তুতিতে সবচেয়ে বেশি কাজে দিয়েছে গ্রুপ স্টাডি। আমি খুবই ভাগ্যবান, আমার প্রতিটি গ্রুপমেট বিসিএস প্রস্তুতির ব্যাপারে যথেষ্ট সিরিয়াস ছিল। বেশির ভাগ সময় দেখা যায়, কয়েকজন বন্ধু মিলে পড়তে বসলে পড়ার চেয়ে আড্ডা বেশি দেওয়া হয়, আমাদের বেলায় এমনটা হতো না। গ্রুপে বসার পরই পড়া শুরু করতাম, নিজেরাই হোমওয়ার্ক ঠিক করতাম। প্রায় প্রতিদিনই আমরা বিগত পরীক্ষার প্রশ্নপত্র সমাধান করতাম সময় ধরে ধরে। গ্রুপমেটরা একেকদিন একেকজন কুইজের প্রশ্ন বানাতাম, সবাই পরীক্ষা দিতাম। নিজেরা ভাইবা বোর্ড তৈরি করে নিজেরাই ভাইবা দিতাম। এ ছাড়া নিজের বিষয়েও পড়াশোনা করতাম আমরা। কারণ নিজের বিষয়ভিত্তিক প্রশ্নও বিসিএসে আসে। গ্রুপে বসেই প্রতিদিনের সংবাদপত্র পড়তাম, সবাই যার যার মতো গুরুত্বপূর্ণ তথ্যগুলো মার্ক করত, এরপর সবার মার্ক করা বিষয়গুলো নিয়ে সবাই মিলে আলোচনা করতাম। আমি ব্যক্তিগতভাবে প্রচুর সমসাময়িক তথ্যভিত্তিক সাময়িকী ও সাধারণ জ্ঞানের বই পড়তাম, ইংরেজিতে দুর্বলতা কাটানোর জন্য ইংরেজি পত্রিকা পড়তাম, নতুন নতুন ইংরেজি শব্দ নোট খাতায় টুকে রাখতাম। সিনিয়র ভাই-বোনদের সহযোগিতা তো ছিলই। এই ছিল আমার বিসিএসের প্রস্তুতি। এর বাইরে কোনো কোচিংয়ে পড়া বা পরীক্ষা দেওয়া কিছুই করিনি।
৩১তম বিসিএস প্রিলিমিনারির পর বিসিএস লিখিত আর ভাইবায় উত্তীর্ণ হওয়াটা ছিল অনেক আনন্দের একটা ব্যাপার। লিখিত পরীক্ষার সময় আমার মূল লক্ষ্য ছিল, সময় ধরে ধরে উত্তর করা। ভাইবা বোর্ডে সম্মানিত সদস্যরা মুক্তিযুদ্ধ, আমার পড়াশোনার বিষয় সম্পর্কিত প্রশ্ন করেছিলেন। জানতে চেয়েছিলেন আমি কেন পুলিশ হতে চাই। আমার ভাইবাটি বেশ সাদামাটা ছিল। প্রতিটি প্রশ্নের উত্তর অল্প কথায় দেওয়ার চেষ্টা করেছি।
আমার জীবনের সবচেয়ে আনন্দের দিন ছিল, যেদিন আমার এই চাকরিটা হয়। আমি সারা জীবন চেয়েছিলাম একজন পুলিশ অফিসার হতে। এই চাকরিটার ব্যাপারে আমি খুব আত্মবিশ্বাসী ছিলাম এমন কিন্তু নয়। অনেক ধাপ ফেস করতে হয়। একেকটি পরীক্ষার অভিজ্ঞতা একেক রকম। তবে আমি আশাবাদী ছিলাম। বর্তমানে আমি সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার হিসেবে কর্মরত আছি সিরাজগঞ্জের কামারখন্দ সার্কেলে। আমাদের কাজটা যে অনেক চ্যালেঞ্জিং তা বলার অপেক্ষা রাখে না। প্রতিদিনই হাজারটা পরিস্থিতি সামলাতে হয়। যার মধ্যে বেশির ভাগই দুঃখজনক। কিছুদিন আগে জমিজমার বিরোধে আট বছরের একটি শিশুর প্রাণ যায়। অনেক কষ্ট পেয়েছি ওই ঘটনায়। যখন দেখি কোনো নিরপরাধ মানুষ ভোগান্তি থেকে মুক্তি পায়, কোনো প্রকৃত অপরাধী সাজা পায়, তখন সত্যিই অনেক আনন্দ হয়।
সূত্র: কালের কণ্ঠ
এ সময়ে আমার বিসিএস প্রস্তুতিতে সবচেয়ে বেশি কাজে দিয়েছে গ্রুপ স্টাডি। আমি খুবই ভাগ্যবান, আমার প্রতিটি গ্রুপমেট বিসিএস প্রস্তুতির ব্যাপারে যথেষ্ট সিরিয়াস ছিল। বেশির ভাগ সময় দেখা যায়, কয়েকজন বন্ধু মিলে পড়তে বসলে পড়ার চেয়ে আড্ডা বেশি দেওয়া হয়, আমাদের বেলায় এমনটা হতো না। গ্রুপে বসার পরই পড়া শুরু করতাম, নিজেরাই হোমওয়ার্ক ঠিক করতাম। প্রায় প্রতিদিনই আমরা বিগত পরীক্ষার প্রশ্নপত্র সমাধান করতাম সময় ধরে ধরে। গ্রুপমেটরা একেকদিন একেকজন কুইজের প্রশ্ন বানাতাম, সবাই পরীক্ষা দিতাম। নিজেরা ভাইবা বোর্ড তৈরি করে নিজেরাই ভাইবা দিতাম। এ ছাড়া নিজের বিষয়েও পড়াশোনা করতাম আমরা। কারণ নিজের বিষয়ভিত্তিক প্রশ্নও বিসিএসে আসে। গ্রুপে বসেই প্রতিদিনের সংবাদপত্র পড়তাম, সবাই যার যার মতো গুরুত্বপূর্ণ তথ্যগুলো মার্ক করত, এরপর সবার মার্ক করা বিষয়গুলো নিয়ে সবাই মিলে আলোচনা করতাম। আমি ব্যক্তিগতভাবে প্রচুর সমসাময়িক তথ্যভিত্তিক সাময়িকী ও সাধারণ জ্ঞানের বই পড়তাম, ইংরেজিতে দুর্বলতা কাটানোর জন্য ইংরেজি পত্রিকা পড়তাম, নতুন নতুন ইংরেজি শব্দ নোট খাতায় টুকে রাখতাম। সিনিয়র ভাই-বোনদের সহযোগিতা তো ছিলই। এই ছিল আমার বিসিএসের প্রস্তুতি। এর বাইরে কোনো কোচিংয়ে পড়া বা পরীক্ষা দেওয়া কিছুই করিনি।
৩১তম বিসিএস প্রিলিমিনারির পর বিসিএস লিখিত আর ভাইবায় উত্তীর্ণ হওয়াটা ছিল অনেক আনন্দের একটা ব্যাপার। লিখিত পরীক্ষার সময় আমার মূল লক্ষ্য ছিল, সময় ধরে ধরে উত্তর করা। ভাইবা বোর্ডে সম্মানিত সদস্যরা মুক্তিযুদ্ধ, আমার পড়াশোনার বিষয় সম্পর্কিত প্রশ্ন করেছিলেন। জানতে চেয়েছিলেন আমি কেন পুলিশ হতে চাই। আমার ভাইবাটি বেশ সাদামাটা ছিল। প্রতিটি প্রশ্নের উত্তর অল্প কথায় দেওয়ার চেষ্টা করেছি।
আমার জীবনের সবচেয়ে আনন্দের দিন ছিল, যেদিন আমার এই চাকরিটা হয়। আমি সারা জীবন চেয়েছিলাম একজন পুলিশ অফিসার হতে। এই চাকরিটার ব্যাপারে আমি খুব আত্মবিশ্বাসী ছিলাম এমন কিন্তু নয়। অনেক ধাপ ফেস করতে হয়। একেকটি পরীক্ষার অভিজ্ঞতা একেক রকম। তবে আমি আশাবাদী ছিলাম। বর্তমানে আমি সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার হিসেবে কর্মরত আছি সিরাজগঞ্জের কামারখন্দ সার্কেলে। আমাদের কাজটা যে অনেক চ্যালেঞ্জিং তা বলার অপেক্ষা রাখে না। প্রতিদিনই হাজারটা পরিস্থিতি সামলাতে হয়। যার মধ্যে বেশির ভাগই দুঃখজনক। কিছুদিন আগে জমিজমার বিরোধে আট বছরের একটি শিশুর প্রাণ যায়। অনেক কষ্ট পেয়েছি ওই ঘটনায়। যখন দেখি কোনো নিরপরাধ মানুষ ভোগান্তি থেকে মুক্তি পায়, কোনো প্রকৃত অপরাধী সাজা পায়, তখন সত্যিই অনেক আনন্দ হয়।
সূত্র: কালের কণ্ঠ